
আ হ ম আলাউদ্দীন
জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মুসলমানদের অবদানের কথা স্বীকার করে মনীষী রবার্ট ব্রিফোট নির্দ্বিধায় উল্লেখ করেছেন, Science is the most momentous contribution of Arab civilization to the modern world. The debt of our science to the Arabs does not consist in starting discoveries or revolutionary theories; Science owes a great deal more to Arab culture it owes its existence. অর্থাৎ আধুনিক বিজ্ঞান শুধুমাত্র চমকপ্রদ আবিষ্কার বা যুগান্তকারী তত্ত্বকথার জন্যই মুসলমানদের কাছে ঋণী নয়, আধুনিক বিজ্ঞান তার অস্তিত্বের জন্যই মুসলমানদের নিকট চিরঋণী। বলা বাহুল্য, ইসলামের আবির্ভাব না ঘটলে আধুনিক বিজ্ঞানের জন্ম হতো না। হলেও তা নিশ্চিতরূপে যথেষ্ট বিলম্বিত হতো।
(Robert Briffault, The making of History (London; 1934), P. 191.)
বিজ্ঞানের আজ যে উত্থান ও উন্নয়নের পেছনে মৌলিক ভূমিকা পূর্ববর্তী মুসলিম মনীষীদের। কিন্তু, এ ময়দানে যখন তারা পিছিয়ে পড়ে তখন এর নেতৃত্বে আসে পশ্চিমারা।
তবে ইতিহাস এখনো এ কথা ভুলে যায়নি যে, মুসলিম শাসনামল যখন জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সভ্যতার আলোয় রঙিন, তখন পশ্চিমে বিরাজ করছিল অসভ্যতা ও মূর্খতার অন্ধকার। জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মুসলিম বিজ্ঞানী ও তাদের অবদান উল্লেখ করছি।
বিশ্বসেরা কয়েকজন মুসলিম আবিষ্কারক:
মুসা আল খাওয়ারিজমি
পুরো নাম আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে মুসা আল খাওয়ারিজমি। মধ্য এশিয়ার দীর্ঘতম এবং আরব সাগরে পতিত আমু দরিয়ার কাছে একটি দ্বীপের নিকটে খাওয়ারিজম নামক শহরে আনুমানিক ৭৮০ খ্রিস্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাটিগণিত, বীজগণিত, ভূগোল, জ্যোতির্বিজ্ঞান, জ্যামিতিতে প্রভৃত ভূমিকা রাখেন। মূলত বীজগণিতের জন্যই তিনি সবচেয়ে আলোচিত হন। তার ‘আল জাবর ওয়াল মুকাবিলা’ বই থেকে জানা যায়, তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলিম। খলিফা মামুনের বিশাল লাইব্রেরিতে আল খাওয়ারিজমি চাকরি গ্রহণ করেন। এখানেই সম্ভবত তিনি বিজ্ঞানের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। অসীম ধৈর্যসহকারে অধ্যয়ন করে তিনি বিজ্ঞানের যাবতীয় বিষয়ের সঙ্গে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি ছিলেন একজন জগদ্বিখ্যাত গণিতবিদ। তার সময়ের গণিতের জ্ঞানকে তিনি এক অভাবনীয় সমৃদ্ধতর পর্যায়ে নিয়ে তোলেন। একজন গণিতবিদ হওয়ার পাশাপাশি ছিলেন একজন উলেখযোগ্য জ্যোতির্বিদ। ভূগোল বিষয়ে তার প্রজ্ঞা উৎকর্ষতাকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। তিনি ছিলেন বীজগণিত তথা অ্যালজেবরার জনক। তিনি প্রথম তার একটি বইয়ে এই অ্যালজেবরার নাম উল্লেখ করেন। বইটির নাম হলো ‘আল জাবর ওয়াল মুকাবিলা’। তিনি বিজ্ঞানবিষয়ক বহু গ্রিক ও ভারতীয় গ্রন্থ আরবিতে অনুবাদ করেন। পাটিগণিত বিষয়ে তিনি একটি বই রচনা করেন, যা পরে ল্যাটিন ভাষায় অনূদিত হয়। তার হাতেই বীজগণিত পরে আরও সমৃদ্ধতর হয়। বর্তমান যুগ পর্যন্ত গণিতবিদ্যায় যে উন্নয়ন এবং এর সহায়তায় বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় যে উন্নতি ও আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে তার মূলে রয়েছে আল খাওয়ারিজমির উদ্ভাবিত গণিতবিষয়ক নীতিমালারই বেশি অবদান। তার রচিত বই ‘আল জাবর ওয়াল মুকাবিলা’ থেকে বীজগণিতের ইংরেজি নাম অ্যালজেবরা উৎপত্তি লাভ করে।
জাবির ইবনে হাইয়ান
বিজ্ঞানী জাবির ইবনে হাইয়ান আল-আজদি আস সুফি আল-ওমাবি। আরবের দক্ষিণাংশের বাসিন্দা আজদি গোত্রের হাইয়ান ছিলেন তার পিতা। চিকিৎসক পিতার সন্তান হলেও সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে উমাইয়া খলিফা তার পিতাকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করলে বাল্যকালে তিনি চরম দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হন। শৈশবে কুফায় বসবাস করলেও পিতার মৃত্যুর পর তিনি দক্ষিণ আরবে স্বগোত্রে ফিরে আসেন। কুফায় বসবাসের সময় তিনি রসায়নশাস্ত্র গবেষণায় বিশেষ মনোযোগী হন। ওই পরিপ্রেক্ষিতে কুফায় একটি রসায়ন গবেষণাগারও প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলিম ইতিহাসবিদেরা ওই গবেষণাগারকে পৃথিবীর প্রথম রসায়নাগার বলে অভিহিত করেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই প্রথম বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে রসায়নের প্রাথমিক প্রক্রিয়াগুলো চর্চা করার উপায় উদ্ভাবন করেন। রসায়নশাস্ত্রের পাশাপাশি তিনি চিকিৎসা, খনিজ পদার্থ বিশেষত পাথর, দর্শন, যুদ্ধবিদ্যা, জ্যামিতি, জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ে অবদান রাখেন। তিনি প্রায় ২ হাজার বই রচনা করেন। এর মধ্যে চিকিৎসা বিষয়ে বই প্রায় ৫০০।
আল বিরুনি
পারস্যের মনীষী আবু রায়হান আল বিরুনি। তিনি জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কাটিয়েছেন মধ্য এশিয়ায়। ২০ বছর বয়সে তিনি জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ শুরু করেন। তিন বছর ধরে গোটা পারস্য চষে বেড়ান এবং বিভিন্ন পন্ডিতের অধীনে পড়ালেখা করে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞানার্জন করেন। ৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি জুরজানে (বর্তমানে ‘গুরগান’, উত্তর ইরানের একটি শহর) স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। জীবনের পরবর্তী ১০ বছর তিনি উত্তর ইরানের এই ছোট্ট শহরেই বসবাস করেন, নিজের গবেষণা চালিয়ে যান, বই লেখেন এবং জ্ঞানার্জনে রত থাকেন। আল বিরুনি ভূবিদ্যার একজন পথিকৃৎ। তিনি শতাধিক বিভিন্ন ধরনের ধাতু ও রত্নপাথর সংগ্রহ করে সেগুলো পরীক্ষা করেন। একাদশ শতাব্দীতে আল বিরুনি তার বর্ণময় কর্ম ও গবেষণা জীবন চালিয়ে যান এবং বিভিন্ন বিষয়ের গবেষণায় নতুন নতুন ও উলেখযোগ্য অগ্রগতি প্রদান করেন— কীভাবে পৃথিবী এর কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান।
স্থিতিবিদ্যা ও গতিবিদ্যাকে একীভূত করে বলবিদ্যা নামক গবেষণার নতুন ক্ষেত্রের প্রবর্তন করেন তিনি।
ইবনে সিনা
৯৮০ খ্রিস্টাব্দে বোখারা শহরে জন্মগ্রহণ করেন বিখ্যাত চিকিৎসাবিজ্ঞানী, দার্শনিক আবু আলী সিনা। বোখারা শহরটি সে সময় ছিল ইরানের অন্তর্ভুক্ত। ইবনে সিনা দর্শন, বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিজ্ঞান থেকে শুরু করে যুক্তিবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, অঙ্ক ইত্যাদি চর্চা করেছেন। তিনি মাত্র ১৬ বছর বয়সে সমকালীন জ্ঞানী-গুণী, চিকিৎসক ও মনীষীদের পড়িয়েছেন। ফলে সহজেই বোঝা যায় তিনি ছিলেন সে সময়কার সবচেয়ে বড় চিকিৎসক। কথিত আছে, ইবনে সিনা যখন ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়তেন তখন অমীমাংসিত প্রশ্নগুলো তার মানসপটে স্বপ্নের মতো ভাসত। তার জ্ঞানের দরজা খুলে যেত। ঘুম থেকে উঠে তিনি সমস্যার সমাধান করে ফেলতেন! একজন বিখ্যাত চিকিৎসক হিসেবে সর্বত্র তার নাম ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি আল মুজমুয়া নামে একটি বিশ্বকোষ রচনা করেন। এর মধ্যে গণিত ছাড়া সব বিষয় লিপিবদ্ধ করেন। ইবনে সিনা পদার্থবিজ্ঞান, দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, জ্যামিতি, গণিত, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি তার সময়ে পৃথিবীর সেরা চিকিৎসক।
ইবনে হাইসাম
প্রখ্যাত পদার্থবিদ, জ্যোতির্বিদ, প্রকৌশলী, গণিতবিদ, চিকিৎসাবিদ, দার্শনিক, মনোবিজ্ঞানী, আবু আলী আল হাসান ইবনে আল হাসান আল ইবনে হাইসাম। তিনি বসরায় জন্মগ্রহণ করায় আল বাসরি নামেও পরিচিত। আলোকবিজ্ঞানে অসামান্য সংযোজন ‘কিতাবুল মানাজির’-এর ১৫-১৬ অধ্যায়ে জ্যোতির্বিদ্যার আলোচনা রেখেছেন। এ ছাড়া তার ‘মিজান আল-হিকমাহ’ এবং ‘মাককাল ফি দ্য আল-কামার’ গ্রন্থদ্বয়ে তিনি সর্বপ্রথম গাণিতিক জ্যোতির্বিদ্যা ও পদার্থবিদ্যার সমন্বয় সাধনের চেষ্টা চালান।
আল রাজি
আবু বকর মুহাম্মদ ইবন জাকারিয়া আল রাজি বা আল রাজি। তিনি ৮৪১ খ্রিস্টাব্দে ইরানের তেহরানে জন্মগ্রহণ করেন। রাজি ছিলেন একজন দক্ষ পারশিয়ান চিকিৎসক ও দার্শনিক। তিনি চিকিৎসাবিদ্যা, আল কেমি, পদার্থবিদ্যা ও অন্যান্য বিষয়ের ওপর ১৮৪টিরও বেশি বই লিখেছেন।
তিনি সালফিউরিক অ্যাসিড আবিষ্কার করেন। তিনি ইথানল উৎপাদন, বিশোধন ও চিকিৎসায় এর ব্যবহার প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন। তিনি একজন বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ছিলেন। তিনি বহু দেশ ভ্রমণ করেন।
আল বেতরুগি
নুর আদ-দীন ইবনে ইসহাক আল বেতরুগি। তিনি ইসলামের সোনালি যুগে মরক্কোয় জন্মগ্রহণ করেন। তার ব্যক্তিগত জীবনী খুব বেশি জানা যায়নি। তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ। তিনি ‘স্পেশিয়াল মোশন’ নিয়ে যুগান্তকারী মতবাদ দিয়েছিলেন। তার সীমাবদ্ধতা থাকার পরও তিনি প্লেন্টারি মোশন নিয়ে নিজস্ব থিওরি প্রদান করেছিলেন; যা এখন ঠিক।
ওমর খৈয়াম
অনেক ইতিহাসবিদের মতে সুলতান মাহমুদের মৃত্যুর কিছু আগে ওমর খৈয়াম জন্ম গ্রহণ করেন। ওমর খৈয়ামের শৈশবের কিছু সময় কেটেছে অধুনা আফগানিস্তানের বালখ শহরে। সেখানে তিনি খোরাসানের অন্যতম সেরা শিক্ষক হিসেবে বিবেচিত ইমাম মোয়াফেফ্ক নিশাপুরির শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। দিনের বেলায় জ্যামিতি ও বীজগণিত পড়ানো, সন্ধ্যায় মালিক শাহর দরবারে পরামর্শ প্রদান এবং রাতে জ্যোতির্বিজ্ঞানচর্চার পাশাপাশি জালালি বর্ষপঞ্জি সংশোধন— সবটাতে তার নিষ্ঠার কোনো কমতি ছিল না।
জীবদ্দশায় ওমরের খ্যাতি ছিল গণিতবিদ হিসেবে। তিনি প্রথম উপবৃত্ত ও বৃত্তের ছেদকের সাহায্যে ত্রিঘাত সমীকরণের সমাধান করেন। ওমরের আর একটি বড় অবদান ইউক্লিডের সমান্তরাল স্বীকার্যের সমালোচনা, যা পরবর্তী সময়ে অ-ইউক্লিডীয় জ্যামিতির সূচনা করে।
১০৭০ খ্রিস্টাব্দে তার পুস্তক মাকালাত ফি আল জার্ব আল মুকাবিলা প্রকাশিত হয়। এ পুস্তকে তিনি ঘাত হিসেবে সমীকরণের শ্রেণিকরণ করেন এবং দ্বিঘাত সমীকরণের সমাধানের নিয়মাবলি লিপিবদ্ধ করেন। ওমর খৈয়াম জ্যোতির্বিদ হিসেবেও সমধিক পরিচিত।
আল ফারাবি
বিজ্ঞানী ও দার্শনিক আল ফারাবির আসল নাম আবু নাসের মুহাম্মদ ইবনে ফারাখ আল ফারাবি। আল ফারাবির পিতা ছিলেন উচ্চশিক্ষিত ও সেনাবাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তার পূর্বপুরুষরা ছিলেন পারস্যের অধিবাসী। ইসলাম গ্রহণ ও রাজনৈতিক কারণে তার পূর্বপুরুষরা পারস্য ত্যাগ করে তুর্কিস্তানে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় ফারাবায়। সেখানে কয়েক বছর শিক্ষা লাভের পর শিক্ষার উদ্দেশ্যে চলে যান বোখারায়। এরপর উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য তিনি গমন করেন বাগদাদে।
সেখানে তিনি সুদীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর অধ্যয়ন ও গবেষণা করেন। জ্ঞানের অন্বেষণে তিনি ছুটে গিয়েছেন দামেস্কে, মিসরে এবং দেশ-বিদেশের আরও বহু স্থানে।
পদার্থবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, দর্শন, যুক্তিশাস্ত্র, গণিতশাস্ত্র, চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রভৃতিতে তার অবদান ছিল উলেখযোগ্য। তবে বিজ্ঞান ও দর্শনে তার অবদান ছিল সর্বাধিক। পদার্থবিজ্ঞানে তিনিই ‘শূন্যতার’ অবস্থান প্রমাণ করেছিলেন। দার্শনিক হিসেবে ছিলেন নিয় প্লেটনিস্টদের পর্যায়ে বিবেচিত।
আল বাত্তানি
৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে মেসোপটেমিয়ার অন্তর্গত বাত্তান নামক স্থানে আল বাত্তানি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন অঙ্কশাস্ত্রবিদ ও জ্যোতির্বিদ। তিনিই সর্বপ্রথম নির্ভুল পরিমাপ করে দেখিয়েছিলেন যে, এক সৌর বছর ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে হয়। তিনি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন, সূর্যের আপাত ব্যাসার্ধ বাড়ে ও কমে। সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ সম্পর্কেও তার বক্তব্য ছিল সুস্পষ্ট। আল বাত্তানি তার নিজস্ব উদ্ভাবিত যন্ত্র দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন যে সূর্য তার নিজস্ব কক্ষপথে গতিশীল।
এই মহান মনীষী ৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ৭২ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন। আল বাত্তানি ছিলেন একজন মশহুর জ্যোতির্বিদ ও গণিতজ্ঞ। তিনি জ্যোতির্বিদ্যাচর্চার জন্য নিজস্ব মানমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বহু বছর ধরে জ্যোতির্বিদ্যায় প্রচলিত ভুলগুলো সংশোধন করে এই শাখার অনেক সংস্কার ও উন্নতিসাধন করেন। পাশ্চাত্য ইতিহাসবিদরা তাকে উলেখ করেছেন ‘আল বাতেজনিয়াজ’, ‘আল বাতেজনি’, ‘আল বাতেনিয়াজ’ ইত্যাদি নামে। তাই তার পরিচয় অনেকটাই ইতিহাসে হারিয়ে যেতে বসেছে।
ইবনুন নাফিস
চিকিৎসাবিজ্ঞান ও আইনশাস্ত্রে তার অবদান অবিস্মরণীয়। ইবনুন নাফিস মানবদেহে রক্তসঞ্চালন পদ্ধতি, ফুসফুসের সঠিক গঠন পদ্ধতি, শ্বাসনালি, হৃৎপিন্ড, শরীরে শিরা-উপশিরায় বায়ু ও রক্তের প্রবাহ ইত্যাদি সম্পর্কে বিশ্বের জ্ঞানভাণ্ডারকে অবহিত করেন। তিনি মানবদেহে রক্ত চলাচল সম্পর্কে গ্যালেনের মতবাদের ভুল ধরিয়েছিলেন তিনি এবং এ সম্পর্কে নিজের মতবাদ সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন।
বানু মুসা
বানু মুসাকে বলা হয় জ্যোতির্বিদদের মধ্যে বিস্ময়কর একজন। কারণ আর কিছুই নয়, তার সময়ে তিনি যে উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন তা এক কথায় অবিশ্বাস্য। নবম শতকে বাগদাদের তিন মনীষীর একজন ছিলেন তিনি। এই তিনজনকে একত্রে বলা হতো মেশিনারি জগতের বিস্ময়। তারা পিরমাপক যন্ত্রের উৎকর্ষ সাধন করেছিলেন।
আল সাইগ
প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ, যুক্তিবিদ, দার্শনিক, পদার্থবিদ, মনোবিজ্ঞানী, কবি এবং বিজ্ঞানী আবুবকর মুহাম্মদ ইবনে ইয়াহিয়া ইবনে আল সাইগ। তবে তিনি ইবনে বাজ্জাহ নামে বেশি পরিচিত। তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। উদ্ভিদবিদ হিসেবেও তার সুনাম ছিল। আল সাইগের কবিতাগুলোও প্রশংসাযোগ্য।
আল কিন্দি
আবু ইউসুফ ইয়াকুব ইবনে ইসহাক আল কিন্দি ছিলেন কোরআন, হাদিস, ফিকাহ, ইতিহাস, দর্শন, ভাষাতত্ত্ব, রাজনীতি, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা প্রভৃতি নানা বিষয়ে বিশারদ। তিনি ছিলেন গ্রিক, হিব্রæ, ইরানি, সিরিয়াক এমনকি আরবি ভাষায়ও ব্যুৎপত্তিসম্পন্ন। তিনি নানা বিষয়ে ২৬৫ খানা গ্রন্থ রচনা করেন। তার বইগুলো এখনো বহুল পঠিত।
আল বলখি
মুসলিম জ্যোতির্বিদদের অগ্রগতি ছিল প্রশ্নাতীত। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানেই মুসলিম জ্যোতির্বিদদের সাফল্যের খোঁজ মিলেছিল। তাদেরই একজন জাফর ইবনে মুহাম্মদ আবু মাশার আল বলখি। তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত পারশিয়ান জ্যোতির্বিদ, দার্শনিক, গণিতবিদ। তিনি আল ফালাকি, আবুল মাশার, ইবনে বলখি নামেও পরিচিত। তার কাজ এখনো প্রশংসনীয়।
এক নজরে সেরা যারা
> রসায়নের জনক – জাবির ইবনে হাইয়ান
> বিশ্বের সেরা ভূগোলবিদ – আল বিরুনি
> আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক – ইবনে সিনা
> হৃদযন্ত্রে রক্ত চলাচল আবিষ্কারক – ইবনুন নাফিস
> বীজগণিতের জনক – আল খাওয়ারিজমি
> পদার্থবিজ্ঞানে শূন্যের অবস্থান নির্ণয়কারী – আল ফারাবি
> আলোকবিজ্ঞানের জনক – ইবনে আল হাইসাম
> অ্যানালিটিক্যাল জ্যামিতির জনক – ওমর খৈয়াম
> সাংকেতিক বার্তার পাঠোদ্ধারকারী – আল কিন্দি
> গুটিবসন্ত আবিষ্কারক – আল রাজি
> টলেমির মতবাদ ভ্রান্ত প্রমাণকারী – আল বাত্তানি
> ত্রিকোণমিতির জনক – আবুল ওয়াফা
> স্টাটিক্সের প্রতিষ্ঠাতা – সাবেত ইবনে কোরা
> পৃথিবীর আকার ও আয়তন নির্ধারণকারী – বানু মুসা
> মিল্কিওয়ের গঠন শনাক্তকারী – নাসিরুদ্দিন তুসি
> অ্যালজেবরায় প্রথম উচ্চতর পাওয়ার ব্যবহারকারী – আবু কামিল
> ল অব মোশনের পথপ্রদর্শক – ইবনে বাজ্জাহ
> ঘড়ির পেন্ডুলাম আবিষ্কারক – ইবনে ইউনুস
> পৃথিবীর ব্যাস নির্ণয়কারী – আল ফারগানি
> পৃথিবীর প্রথম নির্ভুল মানচিত্র অঙ্কনকারী – আল ইদদিসি
> বিশ্বের প্রথম স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের আবিষ্কারক – আল জাজারি
> সূর্যের সর্বোচ্চ উচ্চতার গতি প্রমাণকারী – আল জারকালি
> বীজগণিতের প্রতীক উদ্ভাবক – আল কালাসাদি
‘১০০১ আবিষ্কার’ এর ওপর লেখা বইতে এমন কয়েকটি আবিষ্কার তুলে ধরা হলো যা আমরা প্রতিদিনই ব্যবহার করে থাকি।
১. ঘড়ি : তুরস্কের দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত ডিয়ারবাকির শহরের আল যাযারি নামক একজন প্রতিভাবান ব্যাক্তি বিশ্বের সর্বপ্রথম ঘড়ির আবিষ্কার করেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত জ্ঞানী এবং একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার। ১২০৬ সালের মধ্যে তিনি বিভিন্ন আকার এবং আকৃতির ঘড়ি বানিয়ে ফেলেন। দিনের নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ পড়ার কথা এবং মসজিদে যথাসময়ে আযান দেওয়ার সময় জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে এই আবিষ্কার করা হয় বলে ধারণা করা হয়।
২. ক্যামেরা : ইবনে আল হাইথাম তার আবিষ্কার করা ক্যামেরা দিয়ে পুরো আলকবিজ্ঞানের ধারণা বদলে দেন। তখনকার সময়ে সকলে এটা বিশ্বাস করতো যে আমাদের চোখ থেকে একটি অদৃশ্য আলোক রশ্মির কারণেই মানুষ দেখতে পেত। তবে হাইথাম এই ধারণা ভুল প্রমাণিত করে বলেন, চোখ থেকে লক্ষ্যবস্তুর দিকে আলোক রশ্মি প্রতিফলিত হলেই আমরা চোখে দেখতে পাই।
৩. পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা : ইসলামে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, হোক সেটা শারীরিক অথবা আধ্যাত্মিক। দশম শতাব্দীর ইসলামিক দুনিয়ায় তখন এমন বাথরুম এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা হত যা বর্তমানের বাথরুম এবং পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে টেক্কা দিতে সক্ষম। ১৩ শতাব্দীতে আল-যাযারি নামের এক লেখক একটি অযুর মেশিন আবিষ্কার করেন যা দিয়ে যেকোনো যায়গায় অযু করা সম্ভব। এটি যেকোনো অতিথির সামনে নিয়ে গেলে তারা এটির একটি বাটনে চাপ দিতেন এবং এই পাত্র থেকে আটটি ধারায় অযু করার জন্যে যথেষ্ট পানি পড়তো। এই পদ্ধতির ফলে পানিও সাশ্রয় হত। মুসলিমরা শুধুমাত্র পানি দিয়ে নিজেদেরকে ধোয়ার চাইতে নিজেদেরকে একেবারে পরিস্কার রাখতে পছন্দ করতো। এই জন্যে তারা তেল এবং ‘আল কালি’ নামক একটি লবন জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করে সাবান বানাতো। আল কিনদি সুগন্ধির ওপর একটি বই লেখেন যার নাম ছিল ‘বুক অফ দ্য কেমিস্ট্রি অফ পারফিউম অ্যান্ড ডিস্টিলেশন’। এই বইয়ে ১০০টিরও বেশি সুগন্ধি প্রস্তুত করার জন্যে প্রণালী লেখা ছিল।
৪. উড়ন্ত মেশিন : আব্বাস ইবনে ফিরনাসই ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি এমন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করতে পেরেছিলেন যা কিনা সত্যিকার অর্থে উড়তে পারে। নবম শতাব্দীতে তিনি একটি পাখির মত দেখতে জামা বানিয়ে ছিলেন। এই জামাটির দুটো ডানাও ছিল যেটার সাহায্যে একজন মানুষ আকাশে উড়তে সক্ষম হত। স্পেনে পরীক্ষামূলকভাবে এটি ওড়ানো হলে এটি বেশকিছুক্ষণ আকাশে উড়লেও এটি নিচে পড়ে যায়। এই ঘটনায় আব্বাসের কোমর ভেঙ্গে যায়।
৫. অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম : আমরা যদি দশম শতাব্দীতে ফিরে যাই, তাহলে আমরা হয়তো তখনকার সময়ের একজন চিকিৎসকের কথা মনে হবে। আবুল কাশিম খালাফ ইবনে আল আব্বাদ আল যাহরাওয়ি নামক সে চিকিৎসক পশ্চিমা বিশ্বে আবুলক্যাসিস নামেও বেশ পরিচিত ছিলেন। তিনি আল তাদ্রিফ বইটি লেখেন যেখানে তার কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা থেকে সকল চিকিৎসা শাস্ত্রের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি সেখান ‘অন সার্জারি’ নামক একটি পদ্ধতির কথাও উল্লেখ করেন। এই পদ্ধতিতে অন্তত দুইশত আলাদা অস্ত্রপাচারের সরঞ্জামের কথা লেখা ছিল। এটিই ছিল চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রথম অস্ত্রপাচারের সরঞ্জামের উল্লেখ, এবং এই বইয়ে এগুলোর ব্যবহারবিধিও বলে দেওয়া হয়েছিল। এই সরঞ্জামগুলোর নকশা এতোটাই নিখুঁত ছিল যে বর্তমান বিশ্বেও এগুলো খুবই কম পরিবর্তিত হয়েছে।
৬. মানচিত্র : প্রায় ৩৫০০ বছর ধরে মানচিত্র মানুষকে পথ দেখাতে সাহায্য করেছে। আগে কাদামাটির ছোট ছোট প্লেটের মত বস্তুুতে তা আঁকা থাকতো। মানচিত্র আঁকাতে কাগজের ব্যবহার এটিকে অন্যন্য এক মাত্রা এনে দেয়। সেসময় মুসলিমদের ধর্মীয় এবং বাণিজ্যিক কাজে তারা ঘর থেকে বের হয়ে পৃথিবীটিকে ঘুরে দেখতে শুরু করে। তারা যখন যাত্রা শেষে বাড়ি ফিরতেন, তাদের অভিজ্ঞতার কথা বাসার সবাইকে জানাতেন। প্রথমে মৌখিকভাবে মানচিত্রের ব্যবহার করা হলেও এরপর ধীরে ধীরে কাদামাটি এবং কাগজের ব্যবহারও শুরু হয়।
৭. কফি : সারা বিশ্বে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১,৬০০,০০০,০০০ কাপ কফি বিক্রি হয়। কোটি কোটি মানুষ তাদের দৈনন্দিন রুটিনের অন্যতম অংশ হিসেবে কফি পান করে। নবম শতকের দিকে ইয়েমেনবাসী মুসলিমরা প্রথম কফি চাষ ও উৎপাদন শুরু করে। প্রথম প্রথম আধ্যাাত্মিক সাধনায় নিমগ্ন সুফিরা রাত জেগে ইবাদত করার জন্য কফি পান করতেন বলে ইতিহাস থেকে জানা যায়। এরপর একদল শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে এই কফি মিসরের রাজধানী কায়রোতে এসে পৌঁছায় এবং সেখানেও চাষ শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে সমগ্র আরব বিশ্বে এবং পর্যায়ক্রমে ইউরোপসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
৮. বীজগণিত : বিজ্ঞানীদের জাদুর কাঠি হলো গণিত। বীজগণিতের প্রথম গ্রন্থটি রচনা করেছেন পার্সিয়ার বিখ্যাত মুসলিম গণিতবিদ আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে মুসা আল-খোয়ারিজম। এরপর সপ্তম শতকে তিনি রচনা করেন দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘আল-জাবর ওয়াল মুকাবলা’। তার রচিত এই বইটি থেকেই মূলত এই শাস্ত্রের নাম হয় অ্যালজেবরা। আল-খোয়ারিজম রচিত বীজগণিতের ওপর ভিত্তি করেই আধুনিক গণিতের যাত্রা ও পথচলা শুরু হয়।
৯. বিশ্ববিদ্যালয় : আফ্রিকা মহাদেশের অন্যতম মুসলিম দেশ মরক্কো। ৮৫৯ সালে প্রিন্সেস ফাতেমা আল ফিরহি মরক্কোর ফেজেতে বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন এবং সর্বপ্রথম এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি সনদ প্রদানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরবর্তীকালে প্রিন্সেস ফাতিমার বোন মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর পুরো কমপ্লেক্সটির নাম হয় ‘কারউইয়িন বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং মসজিদটির নাম রাখা হয় ‘আল কারউইয়িন মসজিদ’। প্রায় ১২০০ বছর যাবত স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
১০. হাসপাতাল : নবম শতকে মিসরে প্রথম হাসপাতাল ব্যবস্থার সূচনা হয়। আহমদ ইবনে তুলুন নামক এক মুসলিম ৮৭২ সালে মিসরের রাজধানী কায়রোতে সর্বপ্রথম হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। কায়রো থেকে পরবর্তীতে হাসপাতাল ব্যবস্থার ধারনা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। তুলুনিদ সম্রাজ্যে স্থাপিত প্রথম হাসপাতালের নাম হচ্ছে আহমদ ইবন তুলুন হাসপাতাল। এর পরবর্তীকালে বাগদাদে আরো নতুনভাবে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
১১. আলোকবিদ্যা বা অপটিকস : আলোকবিজ্ঞান হলো পদার্থবিজ্ঞানের একটি শাখা- যা আলোর আচরণ, বৈশিষ্ট্যাবলী এবং বস্তুর সঙ্গে আলোর পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া বর্ণনা করে। আলোকবিদ্যা আলোক সম্পর্কীয় প্রত্যক্ষ ঘটনা ব্যাখ্যা করে। মুসলমানদের মাধ্যমেই আধুনিক আলোকবিদ্যার শিক্ষার ভিত্তি রচিত হয়েছিল। আনুমানিক এক হাজার সালের দিকে বিশ্ববিখ্যাত মুসলিম পদার্থবিদ ইবনে আল হাইছাম প্রমাণ করেন যে, ‘বস্তু থেকে প্রতিফলিত আলো মানুষের চোখে প্রবেশের পরই কেবল মানুষ সে বস্তু দেখতে পায়’। তার আবিষ্কৃত এই মতবাদ বিজ্ঞানী ইউক্লিড ও টলেমির প্রাচীন ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে। মুসলিম পদার্থবিদ ইবনে আল হাইছাম মানুষের চোখের সাথে ক্যামেরার সাদৃশ্যও আবিষ্কার করেন। তার এই সূত্রকে মূল ধরে পরবর্তীকালে ক্যামেরা আবিষ্কৃত হয়েছে।
উপসংহারঃ মুসলমানদের বিভিন্ন আবিষ্কার, গবেষণাকর্ম ও সূত্রের সাহায্যে বিজ্ঞানকে করেছে সমৃদ্ধশালী। বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান বর্ণনাতীত। একথা সবাইকে স্বীকার করতে হবে যে মুসলমানরা আধুনিক বিজ্ঞানের সফল পথিকৃৎ।
লেখক: কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক
ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ
প্রধান শিক্ষক, প্রিন্সিপিয়া স্কুল এন্ড কলেজ