
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, জনগণের ভাষা বুঝতে ব্যর্থ হলে সরকারকে চরম খেসারত দিতে হবে। জনগণের সেন্টিমেন্টের বিরুদ্ধে গিয়ে কোন সরকারই টিকেনি। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারও টিকবে না। কাজেই পদত্যাগ করে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন, এতে সকলেরই কল্যাণ হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কিছু দিন আগে বলেছেন, দিল্লী আছেতো আমরা আছি। এ কথার ব্যাখা আমরা পরিস্কার ওবায়দুল কাদেরের কাছ থেকে জানতে চাই। এ কথার মাধমে জাতিকে পরিস্কার মেসেজ দিয়েছে, আমরা এখন স্বাধীন নাই।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মাদারীপুর জেলা শাখার উদ্যোগে শহরের ‘লেকপাড়স্থ স্বাধীনতা অঙ্গনে’ আয়োজিত বিশাল জেলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সমাবেশে বিশেস অতিথি ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। সংগঠনের মাদারীপুর জেলা সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক ঢাকা বিভাগ অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী মাওলানা আমিনুল ইসলাম ও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইনের পরিচালনায় এসময় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ নেছার উদ্দিন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) মাওলানা নূরুল ইসলাম আল-আমিন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, জেলা সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল ওযাহ্হাব মুন্সি, আলহাজ আজিজুল হক, মামুনুর রশিদসহ জেলা নেতৃবৃন্দ।
পীর সাহেব চরমোনাই দেশের মানবধিকারের অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, আজকে দেখেন যে, যখন মানুষ রাস্তায় নামে তখন খবর পাওয়া যায় ওমুককে পাওয়া যায় না গুম হয়ে গেছে। এরকম শত শত মানুষ বাংলাদেশে গুম হয়ে গেলো। লাশটা পর্যন্ত পাওয়া গেলো না। কত মায়ের কুল খালি হলো, কত স্ত্রী বিধবা হলো, সন্তানেরা এতিম হলো। আজকে ঘরে থাকলে খুন ।
তিনি আরো বলেন, যারা আওয়ামী লীগ করবে না এ রকম লক্ষ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলার মাধ্যমে আজকে তাদের দিন রাত্রি জেলের ভিতর কাটাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, এই আওয়ামীলীগ সরকার যখন বিরোধি দলে ছিল। তখন তারা কিন্তু তত্বাবধায়ক সরকারের মাধমে সুন্দর একটি অবাধ নির্বাচনের ব্যাপারে বাংলাদেশে পনে দুইশোর উপরে হরতাল অবরোধসহ বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম রাজপথে দিয়েছিল। আমরা এটাও দেখিছি লগি বৈইঠা দিয়ে রাজ পথে খাকা মানুষদের পিটিয়ে মারা হয়েছে। তখন তাদের দাবীটা ছিল একটা নিরপেক্ষ গ্রহনযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের দাবী। আজকে যখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় গেলো। যাওয়ার পরে তত্বাবধায়ক সরকার কি জিনিস বুঝে না। তারা এখন দলীয়ভাবে নির্বাচন করবে ক্ষমতায় থাকবে।আপনি প্রধান মন্ত্রী আপনার কাথার উপর আস্তা রাখা আমাদের জরুরী ব্যাপার। কিন্তু বিগত দিনের আপনার ধোকা বাংলাদেশের জনগন বুঝে গেছে।
বিগদ সময়ের নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন করেছেন ১৫৪ জনের মত এমপি বিনা ভোটে নির্বাচিত। এরা কি জনগণের সরকার হয়?। ২০১৮ সালে আপনি ওয়াদা করেছিলেন আসেন একটা সুষ্ঠু অবাধ নিরোপেক্ষ নির্বাচন হবে। সকল বিরোধী দল নির্বাচনে গিয়েছে। তখন দিনের ভোট রাতে বাক্সের ভিতর আগেই ঢুকিয়ে সুন্দর তারা পরিপাটি হয়ে অবৈধ্যভাবে সরকার ঘোষণা করলেন। আজকের এই অবস্থায় দেশের সুষ্ট নির্বাচন ফিরিয়ে আনতে হলে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে একটি সুষ্ট নির্বাচন দরকার।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ইসলামী আন্দোলনের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, আপনি যদি দেশের এতই উন্নয়ন করে থাকেন। তাহলে নির্দলীয় জাতীয় সরকারের অধিনে নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছেন কেন। আপনি যদি দেশে এত ভাল কাজ করে থাকেন জনগণতো আপনাকে ভোট দিবে। তাহলে কেন ভয় পাচ্ছেন। আজকে আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন করার দাবী করছেন।