
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই) বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ইসলাম বিমুখ করে নাস্তিক্যবাদী জাতি গঠনে কাজ করা হচ্ছে। ভারতের প্রেসক্রিপশনে এদেশে শিক্ষা ও সংস্কৃৃতির বিরুদ্ধে আগ্রাসন চলছে। মেধাশূণ্য জাতি গঠনের চক্রান্ত চলছে। দেশ-বিদেশের বড় বড় কোম্পানীর শীর্ষে ভারতীয়রা। আমাদের দেশের জনগণ করে সুইপার-ক্লিনারের কাজ। এটা দীর্ঘদিনের চক্রান্তের ফসল।
তিনি বলেন, ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে ডিভাইসমুখী করে গড়ে তোলার মাধ্যমে তাদের মেধা ও মননের ধ্বংস করা হচ্ছে। দেশের মেধাবীদেরকে মূল্যায়ন না করায় তারা বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছে। নাসার বিজ্ঞানীদের মধ্যে বাংলাদেশী বিজ্ঞানী থাকলেও তাদের কোন মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের জীবনকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে ‘বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম পরিবর্তন ও ট্রান্সজেন্ডারকে প্রোমোট’ করার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ পূর্ব সমবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ডা. শহিদুল ইসলাম, নূরুজ্জামান সরকার, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, কেএম শরয়াতুল্লাহ, মুফতী মাছউদুর রহমান, হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান, হাফিজুল হক ফাইয়াজ, হাফেজ শাহাদাত হোসেন প্রধানিয়া, মাইদুল ইসলাম সিয়াম, কাওছার মাহমুদ প্রমুখ।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে স্পষ্ট করতে হবে তিনি ট্রান্সজেন্ডারের পক্ষে নাকি বিপক্ষে। ৯২ ভাগ মুসলমানের শিক্ষা ব্যবস্থায় কারা ট্রান্সজেন্ডার সংযোজন করেছে, তাদের পরিচয় তুলে ধরতে হবে। ট্রান্সজেন্ডারের নামে সমকামিতাকে প্রমোট করছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। সমকামিতার বিরোধিতা করায় আসিফ মাহতাব স্যারকে ব্র্যাক থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
তিনি তাকে চাকুরীতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় ব্র্যাকের সকল প্রতিষ্ঠানকে বয়কট করা হবে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক সরোয়ার স্যারকেও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এধরনের আস্ফালন মেনে নেয়া হবে না।
বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, এ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত শিক্ষা কারিকুলামের মধ্যে মুসনমানদের ইতিহাস ছিল। আবু বকর (রা.) এর ইতিহাস ছিল ওমরের ইতিহাস ছিল। ড. শহিদুল্লাহর হাজারও গল্প ছিল। কিন্তু এগুলোকে আজ বিলীন করা হচ্ছে। ওরা (ভারত) জানে কাঁটাতারের বেড়াই বড় সীমান্ত নয়, এদেশের বড় সীমান্ত হলো মুসলমান। যদি এদেশের মুসলমানকে নষ্ট করা যায়, তাহলে কাঁটাতারে বেড়া থাকবে না। এপার বাংলা ওপার বাংলা এক হয়ে যাবে।
সীমান্তে বিজিবি সদস্য হত্যাকান্ডের নিন্দা জানিয়ে মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, বিজিবি হত্যাকান্ডের পরও কোন প্রতিক্রিয়া না থাকা প্রমাণ করে বিজিবির সদস্যদের পোশাক, বুট ও রাইফেল আছে, সাহস, রক্ত, মনুষ্যত্ব নেই।
পরে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট, পল্টন মোড়, বিজয়নগরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।