
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, ভাষা সৈনিকরা নিজেদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলা ভাষাতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তবে স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫২ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও দেশের বিগত সকল সরকার সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে যেমন ব্যর্থ। তেমনি ভাষার মান রক্ষা করতেও ব্যর্থ হয়েছে। তাই ভাষা সৈনিকদের আত্মত্যাগের প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে তাদের পদাংক অনুস্বরণ করে নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা অন্দোলনের সঠিক ইতিহাস ও ভাষার মান রক্ষার সংগ্রামে অমাদেরকে উৎসর্গিত হতে হবে। ভাষা সৈনিকদের অত্মত্যাগ আমাদের প্রেরণা ও পথচলার পথেয়।
আজ (২১ ফেব্রুয়ারি) বুধবার সকাল ১০টায় পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ-এর সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ অল-আমিন সোহাগের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ ওয়ালিউল্লাহ তালুকদার-এর সঞ্চালনায় অন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত অলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, মাতৃভাষা অল্লাহ তা’আলার দেয়া মহান নেয়ামত। দ্বীনের প্রচারে মাতৃভাষায় বুৎপত্তি অর্জনের বিকল্প নেই। কারণ প্রত্যেক নবী-রাসুলকে নিজের মাতৃভাষায় আসমানি কিতাব প্রদান করা হয়েছে। বাংলা ভাষা আমাদের গর্ব। সুতরাং এই ভাষায় ইসলামী সাহিত্য এবং দাওয়াতের শ্রেষ্ঠ নমুনা স্থাপন করতে হবে।
উক্ত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান মুজাহিদ।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ৮ ফাল্গুন ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জাতীয় জীবনে এক গৌরবময় ও ঐতিহ্যবাহী দিন। বাঙালির জাতীয় জীবনের সকল চেতনার উৎস এ দিনটি। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্যে জীবন দিয়ে বাঙালি জাতি অনন্য দৃষ্টি স্থাপন করেছে। পরবর্তীতে তাদের পদায় অনুসরণ করে আন্দোলন-সংগ্রামের ভিত রচিত হয়েছে। দেশ স্বাধীনতা সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে স্বাধীন ভূখন্ড পেয়েছে। আমাদের স্বাধীনতা পরবর্তী শাসকদের উচিত ছিল রাষ্ট্রভাষা বাংলাকে সর্বস্থরে প্রয়োগের মাধ্যমে ভাষা সৈনিকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। জাতির আত্মপরিচয় বিনির্মাণ করা। কিন্তু আমরা অব্যাহতভাবে লক্ষ্য করেছি। ভিন্ন জাতি তথা এদেশের অস্তিত্বের শত্রু ভারতীয় ব্রাহ্মণ্যবাদীদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে এদেশে অবাধে আমদানি করা হচ্ছে। এটি ভাষার মর্যাদা রক্ষায় জীবন বিসর্জন দেওয়া সৈনিকদের প্রতি উপহাসেরই নামান্তর। এর মাধ্যমে দেশের কিশোর ও যুব সম্প্রদায়ের চরিত্র ধ্বংস করার ধারাবাহিক আয়োজন চালানো হচ্ছে। এই জাতি বিলাসী তৎপরতা যদি শীঘ্রই বন্ধ না করে, তবে দেশের জাতীয় চেতনা বলে কিছু থাকবেনা। এদেশের যুব শ্রেণী ও উঠতি প্রজন্মের চিন্তাধারায় দেশপ্রেমের ঘাটতি আসবে, যা দেশের জন্য স্থায়ী ক্ষতির কারণ হবে।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি মুফতী শওকত উসমান, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম নাসির উদ্দিন, দফতর সম্পাদক মুহাম্মাদ তসলিম উদ্দিন রুবেল, অর্থ সম্পাদক শাহ পরান, প্রচার সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লাহ আল-মামুন, দাওয়া ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুহাম্মাদ নাজমুল ইসলাম, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মুহাম্মাদ কাওছার আহমেদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মুহাম্মাদ রায়হানুল ইসলাম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মুহাম্মাদ মিজানুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ আবুল কাশেম ও থানা নেতৃবৃন্দ।